0
0
No products in the cart.

মুক্তিযুদ্ধে ভারত - ড. নূরুন নবী

৳400.00 ৳450.00

ড. নূরুন নবী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাণরসায়ন বিষয়ে বিএসসি (অনার্স) এবং এমএসসি, জাপানের ওসাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পােস্ট গ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা, কিউশু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচ-ডি, আমেরিকার নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে পােস্ট ডক্টোরাল। '৭০ দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং প্রথম সিনেটের সদস্য। ১৯৮০ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস। পেশায় গবেষক-বিজ্ঞানী, বর্তমানে একটি বহুজাতিক কোম্পানির শীর্ষস্থানীয় বিজ্ঞানী হিসেবে অবসর গ্রহণ করেছেন। ড. নূরুন নবীর পেটেন্টকৃত আবিষ্কারের বর্তমান সংখ্যা ৫৫। বিজ্ঞানের পেশাদারী জার্নালে এ যাবৎ তাঁর ৫০টি গবেষণা-নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ফজলুল হক হল শাখার সভাপতি (১৯৬৭-৭১), মুক্তিসংগ্রামের দিনগুলিতে নিবেদিতপ্রাণ ছাত্রকর্মী, ১৯৭১-এর বীর মুক্তিযােদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধের কিংবদন্তি টাঙ্গাইলের বাঘা সিদ্দিকীর ঘনিষ্ঠ ও বিশ্বস্ত সহযােদ্ধা, ফারইস্টার্ন ইকোনমিক রিভিউ বর্ণিত টাঙ্গাইল মুক্তিবাহিনীর ‘ব্রেইন’, মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য প্রধান সেনাপতি কর্তৃক প্রদত্ত ‘স্পেশাল সাইটেশন প্রাপ্ত এবং মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গ্রন্থ লেখক হিসেবে বাংলাদেশ সরকারের একুশে পদকপ্রাপ্ত।

(Available)
Quantity

SKU: MJB

Categories: Dr. Nuran Nabi

Tags: Dr. Nuran Nabi

ভূমিকা
১৯৪৭ সালে পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকেই বাঙালিরা পাকিস্তানের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকে পরিণত হতে থাকে। পাকিস্তানের দুই প্রদেশের মধ্যে অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং রাজনৈতিক বৈষম্য বাড়তেই থাকে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উপলব্ধি করলেন, পাকিস্তানের কাঠামোতে বাঙালির অধিকার এবং ভাগ্যের কোন উন্নয়ন হবে না। আন্দোলন করে অধিকার আদায় করতে হবে। তাই তিনি প্রতিষ্ঠা করলেন ছাত্রলীগ। বাংলা ভাষা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা এবং বিরোধী রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠায় ও নেতৃত্বে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে তিনি হয়ে উঠলেন পূর্ববাংলার স্বাধিকার আন্দোলনের উদীয়মান নেতা।
বঙ্গবন্ধু বাঙালিদের স্বায়ত্তশাসনের জন্য ৬ দফা দাবি উত্থাপন করেন।
পাকিস্তানি সামরিক শাসকগোষ্ঠী বঙ্গবন্ধুকে বার বার গ্রেফতার করে জেলে অন্তরীণ করে। অবশেষে আগরতলা ষড়যন্ত্র নামে রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার ষড়যন্ত্র করে।
আমি সে সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, মুক্তিসংগ্রামের সক্রিয় কর্মী। আমরা ছাত্র সমাজ ১১ দফা আন্দোলনের মাধ্যমে গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি করে বঙ্গবন্ধুকে মুক্ত করে সরকারকে আগরতলা মামলা প্রত্যাহারে বাধ্য করা হয়। স্বৈরশাসক আইয়ুব খান পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়। কিন্তু ক্ষমতা আর এক সেনাপতি ইয়াহিয়া খানের নিকট হস্তান্তর করে। নতুন সামরিক শাসক ইয়াহিয়া খান নির্বাচন দিতে বাধ্য হয়। কিন্তু সেনাবাহিনীকে অবাক করে দিয়ে বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ পাকিস্তানের জাতীয় সংসদের একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে জয়ী হয় এবং পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক পরিষদে মাত্র কয়েকটি ছাড়া অন্য সব আসনে জয়ী হয়।
নির্বাচনের ফল অনুযায়ী বঙ্গবন্ধু ছয় দফার পক্ষে জনগণের ম্যানডেট অর্জন করেন এবং সে মোতাবেক ছয় দফার ভিত্তিতে পাকিস্তানের শাসনতন্ত্র রচনার অধিকার অর্জন করেন।
পশ্চিম পাকিস্তানের জুলফিকার আলী ভুট্টো জাতীয় পরিষদে সংখ্যালঘিষ্ঠ দল হিসেবে জয়ী হয়ে বিরোধী দলে পরিণত হয়। কিন্তু পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী বঙ্গবন্ধুর হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে না এবং স্বায়ত্তশাসনের মূলমন্ত্র ছয় দফার ভিত্তিতে পাকিস্তানের শাসনতন্ত্র রচনা করতে দিবে না। এ বিষয়ে সামরিক শাসক জেনারেল ইয়াহিয়া খান এবং জুলফিকার আলী ভুট্টো ষড়যন্ত্র করে ৩রা মার্চ ১৯৭১ ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় পরিষদ অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করে।
বঙ্গবন্ধু স্পষ্ট বুঝতে পারলেন তাঁর হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর এবং বাংলাদেশের মানুষের স্বায়ত্তশাসনের ম্যানডেট ছয় দফার বাস্তবায়নের বিরুদ্ধে ইয়াহিয়া খানের এ ঘোষণা ছিল একটি ষড়যন্ত্র। তিনি এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ালেন। প্রতিবাদে সারা বাংলাদেশে হরতাল এবং অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিলেন। পূর্ব বাংলার জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে অসহযোগ আন্দোলন চালিয়ে গেল। ১৯৭১ এর ৩রা মার্চ থেকে ২৫শে মার্চ পর্যন্ত সারা বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর আদেশ ও নির্দেশে চলল। ইয়াহিয়া খান আলোচনার অন্তরালে পশ্চিম পাকিস্তান থেকে গোপনে গোপনে প্রতিদিন সৈন্য ও অস্ত্রশস্ত্র আনতে থাকে।
২৫ মার্চ দিবাগত রাতে নিরীহ নিরস্ত্র বাঙালির ওপর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী শতাব্দীর অন্যতম ঘৃণ্য গণহত্যা চালায়। সে রাতে ঢাকা শহরে অবস্থিত সীমান্তরক্ষী বাহিনী ইপিআর-এর সদর দফতর পিলখানা, পুলিশ-এর সদর দফতর রাজারবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং হিন্দু অধ্যুষিত এলাকা শাঁখারিপট্টিতে আক্রমণ করে ১০ হাজারেরও বেশি বাঙালিকে হত্যা করে। শুরু হয় সারা দেশে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধ।
বঙ্গবন্ধুকে তাঁর ধানমণ্ডির বাসা থেকে গ্রেফতার করে পশ্চিম পাকিস্তানের কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। বঙ্গবন্ধু গ্রেফতারের পূর্ব মূহুর্তে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন।
ইতোমধ্যে সেনাবাহিনীর বাঙালি সৈনিক, পুলিশ সদস্য, ইপিআর সদস্য, ছাত্র এবং জনতা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলে। শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। যুদ্ধাপরাধের নিন্দা করেনি, এমনকি বন্ধ করার কোন উদ্যেগ নেয়নি, যা তাঁদের ক্ষমতার আওতায় ছিল।
১৯৭১-এ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পরাশক্তির মধ্যে ঠান্ডা লড়াই ছিল তুঙ্গে। তাঁরা কে কাকে, কীভাবে ল্যাং মেরে বিশ্বে প্রভাব বিস্তার করতে পারবে, সে লড়াইয়ে লিপ্ত ছিল। আমেরিকা, সোভিয়েত ইউনিয়ন, চীন এবং উপমহাদেশের আঞ্চলিক শক্তি ভারত, পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধ সংগঠিত করার সময় কে কী ভূমিকা রেখেছিল তাঁর বিবরণ রয়েছে এ গ্রন্থে। বিশেষ করে কেন নিক্সন এবং কিসিঞ্জার বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল, কেন বাংলাদেশে পাকিস্তানিদের যুদ্ধাপরাধের নিন্দা করেনি, কেন যুদ্ধাপরাধ বন্ধের কোন উদ্যোগ নেয়নি, ঢাকায় নিযুক্ত আমেরিকান কনসাল জেনারেল ব্লাডের বিখ্যাত 'ব্লাড টেলিগ্রাম' পেয়ে এ দুই নেতা কেন ক্ষিপ্ত হয়েছিল, এসবের কাহিনি লিপিবদ্ধ করা হয়েছে এ গ্রন্থে। এ ছাড়াও প্রতিবেশি রাষ্ট্র ভারত কীভাবে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সেই জীবন-মরণ লড়াইয়ে আমাদেরকে সাহায্য করেছিল তার বিবরণ রয়েছে এ গ্রন্থে।
এই গ্রন্থটি রচনা করতে আমাকে নানাভাবে সাহায্য করেছেন আমার জীবনসঙ্গিনী ড. জিনাত নবী, এবং এটি প্রকাশ করেছেন নবান্ন প্রকাশনীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক নূর নাহিয়ান ও কর্ণধার শিলু রহমান। আমি এই ব্যক্তিত্রয়কে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

ড. নূরুন নবী
নিউ জার্সি, আমেরিকা

0.00

5 Star
0%
4 Star
0%
3 Star
0%
2 Star
0%
1 Star
0%

Submit Your Review

Please login to write review!

Upload photos
You can upload up to 6 photos, each photo maximum size is 2048 kilobytes

Related products

0